কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল মনসুর আলী সিকদার আইডিয়্যাল স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর প্রধান শিক্ষককে ৩ দিনের ছুটিতে পাঠিয়ে মনোনয়ন ফরম বিতরণ বন্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিধি লংঘন করে, নির্বাচনী তফসিল বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়নি। প্রধান শিক্ষকের ছুটির এ ৩ দিনই মনোনয়ন ফরম বিতরণ করার নির্দেশনা রয়েছে ঘোষিত তফসিলে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিজের পছন্দের লোকজনকে কমিটিতে আনতে অভিনব এ প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর রামু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবু শামীম রাজারকুল মনসুর আলী সিকদার আইডিয়্যাল স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন। তফসিল অনুযায়ি ১০ টি পদে আগামী ৪ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মনোনয়ন পত্র গ্রহণ ও জমা দেয়ার জন্য সময়সীমা দেয়া হয় ১৭ থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। কিন্তু ১৭ ও ১৮ অক্টোবর মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের বিদ্যালয়ে গিয়েও ফরম পাননি নির্বাচনে অংশগ্রহনে আগ্রহী ব্যক্তিরা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের জানান- প্রধান শিক্ষকই মনোনয়ন পত্র বিতরণ করবেন। কিন্তু তিনি ১৭ অক্টোবর থেকে ৩ দিনের ছুটিতে রয়েছেন।
এ ঘটনায় বুধবার, ১৮ অক্টোবর রামু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও রাজারকুল মনসুর আলী সিকদার আইডিয়্যাল স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার আবু শামীমের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন- স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা মো. মোহসেন শরীফ।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি প্রধান শিক্ষককে ৩ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে নির্বাচনে সকল পদের ফরম বিতরণ বন্ধ রেখেছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের না থাকায় ফরম বিতরণে অপারগতা জানান।
রামু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার আবু শামীম জানান- তিনি তফসিল ঘোষনার পর সেটি বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে টাঙাতে বলেছিলেন। প্রধান শিক্ষকও তাও করেননি। এখন সবাই অভিযোগ করছে , বর্তমান কমিটি প্রধান শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে মনোনয়ন পরম বিতরণ বন্ধ রেখেছে। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও পেয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষককে তিনি ডেকেছিলেন। প্রধান শিক্ষক তাঁর কাছে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো এবং ফরম বিতরণে বাঁধা প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান শিক্ষা কর্মকর্তা আবু শামীম।
এ ব্যাপারে জানার জন্য বুধবার বিকালে মনসুর আলী সিকদার আইডিয়্যাল স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি নাজিম উদ্দিন ফরহাদের মোবাইলে কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারণে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা জানান- বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে তিনি কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত